নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নদীর অব্যাহত ভাঙনে বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় উদ্বোধনের আগেই হুমকির মুখে পড়েছে আড়িয়াল খাঁ সেতুর সংযোগ সড়ক। তাই এখনই নদী ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে সরকারের খরচ হওয়ায় ৭০ কোটির বেশি টাকা গচ্ছা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, আড়িয়াল খাঁ নদের কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বাটাজোর এলাকা থেকে মুলাদী উপজেলা হয়ে হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট থানার সাথে সড়ক যোগাযোগে দীর্ঘদিনের প্রতিবন্ধকতা ছিলো। এ বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৩ সালে ১১২টি পাইলের ওপর ‘প্রি-স্টেসড কংক্রিট গার্ডার’ দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতুটি হয়ে মুলাদীর নাজিরপুরের সাথে মোল্লার হাট ও কুতুবপুরেরও সংযোগ সড়ক রয়েছে। ৪৩২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৮২ মিটার প্রস্থ সেতুটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ৭.৩০ মিটার বা ২৪ ফুট। আটটি ১১২ মিটার ডায়ামিটার ও ৪৮ মিটার লম্বা কাস্ট ইন সিটু পাইলের এ সেতুটিতে পিয়ার রয়েছে ১২টি। ১১.২৯১ মিটার উচ্চতার এবাটমেন্টের ৫টি স্প্যানের এ সেতুটি নির্মাণে জমি হুকুম দখল করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ একর।
সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ দ্রুত ও উন্নত করার লক্ষে ২০১৪ সালে উপজেলার রামারপোল এলাকা দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। সরকারের ‘সাউথ-ওয়েস্টার্ন রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় এ সেতু ও সংযোগ সড়কটির নির্মাণ কাজ চলছে। প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেড প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মূল সেতুর কাজ সম্পন্ন করেছে এবং এমএসটি-এমডিই-জেভি নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠান ৩.৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন সিকদার বলেন, নদী শাসন না করায় এবং অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্বপ্নের সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে উদ্বোধনের আগেই সাধারণ মানুষের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হান্নান মাতুব্বর বরিশালটাইমসকে জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীর অব্যাহত ভাঙনে মুলাদী-কালকিনি সংযোগ সেতুর নিচে ও এর আশপাশের এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এভাবে নদী ভাঙতে থাকলে অচিরেই সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং সেতুটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান বরিশালটাইমসকে জানান, সেতুটির সংযোগ সড়কের কাজ কিছুটা অসমাপ্ত থাকায় এখনও যান ও জন চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেয়া হয়নি। একই সাথে নদী ভাঙনের হুমকির মুখে থাকা সেতুর সংযোগ সড়ক রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
Leave a Reply